ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪

লোহাগাড়া হোটেল মিডওয়েতে বাসযাত্রী-বয় সংঘর্ষে আহত ২০ , আটক ৩

জাহেদুল ইসলাম, লোহাগাড়া প্রতিনিধি:

লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি এলাকায় প্রতিষ্ঠিত চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশে হাইওয়ে রেস্তোরা হোটেল মিডওয়ে ইন-এ ২২ মার্চ সকাল ৮টায় গ্লাস পরিষ্কার করে দেওয়ার কথাকাটিতে উভয় পক্ষের হাতাহাতিতে ২০ জন আহত হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে। বিষয়টি লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা: মো: মোজাম্মেল নিশ্চিত করেছেন।

জানা যায়, কক্সবাজারমূখী যাত্রীবাহী বাস শ্যামলী পরিবহণ হোটেল মিডওয়ে ইন এ যাত্রা বিরতি করেন। শ্যামলী পরিবহনের ১৩ যাত্রী এক টেবিলে বসে নাস্তা করছিলেন। তাদের মধ্যে একজন গ্লাসে ময়লা দেখে টেবিল বয় ডেকে গ্লাস পরিষ্কার করে দেওয়ার জন্য বলেন। তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হলে এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনায় হোটেলের চেয়ার ও গ্লাস ভাংচুর হয়। এতে বাসের ১৩ যাত্রীসহ ২০ জন আহত হন। এদের মধ্যে ফয়সাল নামের এক যুবক গুরুতর আহত হয়। আহতারা হলেন, আখের, শোয়াইবুল হাসান, মাসফিকুর রহমান, সাইফুল মোল্লা, মো: ফয়সাল, মো: হীরণ, ফয়েজ, উজ্জল ও শাওন। তারা সবাই ঢাকা শেরে বাংলা এলাকার বাসিন্দা। হোটেল কর্মীদের মধ্যে আহতরা হলেন, মাউনুদ্দিন, রায়হান, জসিম উদ্দিন, রহমান, সাকিব, ওসমান ও হেলাল। ঘটনা ঘটার সাথে সাথে শ্যামলী পরিবহনটি পালিয়ে যায়।

বাসের যাত্রী আহত উজ্জল বলেন, তারা সবাই ঢাকার ব্যবসায়ী। ঢাকা থেকে কক্সবাজার ভ্রমণের জন্য ১৩ বন্ধু বের হয়। চট্টগ্রাম থেকে শ্যামলী বাসে করে কক্সবাজার যাওয়ার পথে যাত্রা বিরতীতে হোটেলে মিডওয়ে ইনে বাস দাড়াঁয়। আমরাও নাস্তা করার জন্য হোটেলে যাই। নাস্তা করার এক ফাঁকে এক বন্ধু গ্লাসে ময়লা দেখে বয় ডেকে পরিষ্কার করার জন্য বলেন। টেবিল বয়ের সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ওই বন্ধুটি গ্লাসটি আচাড় মেরে ভেঙ্গে ফেলে। ওই সময় অন্যান্য টেবিল বয় এসে তাদের হাতে যা ছিল তা দিয়ে এলোপাতাড়ী মারতে থাকে সবাইকে। তাদের মার সহ্য করতে না পেরে পালিয়ে যাওয়ার সময় হোটেলের কর্মচারীরা ডাকাত ডাকাত বলে চিকৎকার দেয়। হোটেল থেকে ২/৩শ লোক এক সাথে এসে ধাওয়া করে মহাসড়কে মারতে থাকে। এতে এক পর্যাযে ঘটনাস্থলে হোটেল কর্মচারীদেও হাতে থাকা লোহার তাবার আঘাতে ফয়সাল গুরুতর আহত হলে হোটেলের কর্মচারীরা মারা গেছে মনে করে পালিয়ে যায়। ওই সময় পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করেন। তিনি আরো বলেন, ফয়সালের অবস্থা খুবই খারাপ। সিটিস্ক্যান করে এখন আইসিউতে রয়েছে। বাকিটা আল্লাহর উপর।

আটক ফয়েজ বলেন, তাদের মধ্যে ফয়সাল খুবই শান্ত। সে সবাইকে শান্ত করার সেষ্টা করছে। হঠাৎ হোটেলের এক কর্মচারী ফয়সালের উপর চওড়া হয়ে তার মাথায় আঘাত করলে সে মাটিতে পড়ে যায়। পুলিশ না আসলে সেও রক্ষা পেতনা।

মিডওয়ে ইন এর ম্যানেজার হুমায়ুন কবির বলেন, ঘটনার সময় তিনি বাসায় ছিল। ঘটনার খবর পেয়ে হোটেলে এসে দেখেন মারামারি। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মারামারিটা হোটেলের বাইরে চলে যায়। তাদের রক্ষা করতে গিয়ে কয়েকজন কর্মচারীও আহত হন।

হেটেল মিডওয়ে ইন এর পরিচালক মো: গণি বলেন, সকালে বাসের কয়েকজন যাত্রী হোটেলে ভাংচুর চালায়। হোটেলের কর্মচারীরা ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার করলে স্থানীয়রা এগিয়ে আসে হোটেল ও কর্মচারীদের রক্ষা করে। পুলিশ এসে ঘটনাস্থল থেকে ৩ জনকে আটক করেন। তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।

লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা: মো: মোজাম্মেল বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে ১৫/২০ জন আহত ব্যক্তিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এদের মধ্যে ফয়সাল নামের এক যুবকের অবস্থা গুরুতর। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করণ হয়। অন্য আহতদের প্রাথমক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।

ঘটনার খবর পেয়ে লোহাগাড়া থানার এসআই শেখাব উদ্দিন সেলিম ঘটনাস্থল গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। এসআই শেখাব উদ্দিন সেলিম বলেন, ঘটনাস্থল থেকে আহতবস্থায় কয়েকজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করেছি। এদের মধ্যে বাসের ৩ জন যাত্রী হোটেলে আটকে থাকাবস্থায় উদ্ধার করে তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে থানা হেফাজতে রাখা হয়। এ ঘটনায় কেউ এখনো অভিযোগ বা মামলা করেন নাই বলে থানা পুলিশের ডিউটি অফিসার এএসআই বেল্লাল জানান।

এদিকে স্থানীয়রা বলেন, কিছুদিন পরপর হোটেল মিডওয়ে ইন এ মারামারি ঘটনা ঘটে। গত কিছুদিন আগেও বাসের যাত্রীদের সাথে ঘটনা ঘটে। তারা চট্টগ্রাম শহরের বাসিন্দা ছিলেন। স্থানযিরা আরো বলেন, হোটেল মিডওয়ে ইন এর মান নিয়ে সব সময় মারামারির ঘটনা ঘটে। পণ্যের মান যেমন নেই সেবার মানও নেই। তা নিয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটে।

ক্যাপশন: লোহাগাাড়ায় হোটেল মিডওয়ে ইন এ কর্মচারীর আঘাতে আহত বাসের যাত্রী ফয়সালকে মুমুর্ষবস্থায় চমেকে প্রেরণ।

পাঠকের মতামত: